fbpx

ব্রেকিং নিউজ

সেন্ট মার্টিন হোটেলের উপর নিষেধাজ্ঞা

বৈধ কোনো কাগজপত্র না থাকায় কক্সবাজারের প্রবালদ্বীপ সেন্ট মার্টিনের তিনটি হোটেলে পর্যটক থাকার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ‘কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ’ (কউক)।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে কউকের একটি দল সরেজমিন সেন্ট মার্টিন গিয়ে এ অভিযান চালিয়ে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়।

আজকের অভিযানে নেতৃত্ব দেন কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ। সঙ্গে ছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের সহকারী পরিচালক সাইফুল আশ্রাব, কউক সদস্য (প্রকৌশল) লে. কর্নেল মো. আনোয়ারুল ইসলাম, নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফজলুল করিম, টেকনাফ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণয় চাকমা প্রমুখ।

হোটেল তিনটি হলো ব্লু মেরিন রিসোর্ট লি., লাভিবা রিসোর্ট ও বরোমখানা রিসোর্ট।
পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সেন্ট মার্টিনের হোটেল মোটেল কটেজ রয়েছে ১০৬টি। এর কোনোটিতে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছড়পত্র নেই। প্রতিবেশ সংকটাপন্ন (ইসিএ) এই দ্বীপে যেকোনো ধরনের অবকাঠামো নির্মাণ করতে হলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক। তা ছাড়া হোটেলগুলো উচ্ছেদের জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে।

অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে সেন্ট মার্টিন থেকে মুঠোফোনে কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, অভিযানের প্রথম দিন তিনটি হোটেলের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়। এ সময় হোটেল কর্তৃপক্ষ হোটেল নির্মাণের বিপরীতে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরিবেশ ছাড়পত্র এবং কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়াই হোটেলগুলো তৈরি হয়েছে। হোটেলগুলোতে এখন পর্যটকে ভরপুর। তাই আগামী বৃহস্পতিবার থেকে হোটেলগুলোতে কোনো পর্যটক না রাখার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে আজ বুধবার সন্ধ্যার আগে হোটেল কর্তৃপক্ষ যদি বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারে, সে ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বিবেচনা করা হবে।

কউক চেয়ারম্যান বলেন, সেন্ট মার্টিনে দৈনিক কয়েক হাজার পর্যটক ভ্রমণে আসছেন। থাকছেন দ্বীপের ১০৬টি হোটেল মোটেল ও কটেজে। বিপুলসংখ্যক পর্যটক সৈকত ঘুরে বেড়ালেও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কারের কেউ নেই। হোটেলের বর্জ্যও সরাসরি সমুদ্রের পানিতে যাচ্ছে। এতে দূষিত হচ্ছে নীল রঙের স্বচ্ছ পানি। দ্বীপের অন্য হোটেলগুলোতেও অভিযান চালানো হবে।

ব্লু মেরিন ও লাভিবা রিসোর্টের কর্মচারীরা জানান, ৩১ মার্চ পর্যন্ত হোটেলে কোনো কক্ষ খালি নেই। অগ্রিম টাকা দিয়ে লোকজন হোটেল কক্ষগুলো বুকিং দিয়েছেন। এখন নিষেধাজ্ঞার কারণে অগ্রিম বুকিং দেওয়া লোকজন বেকায়দায় পড়বেন। প্রতিটি হোটেলের কক্ষভাড়া আদায় হয়েছে আড়াই হাজার থেকে ছয় হাজার টাকা পর্যন্ত; যা কক্সবাজার শহরের তারকা হোটেলের সমান।
রাজশাহী থেকে ভ্রমণে আসা পর্যটক শাহেন শাহ (৩৭) বলেন, পাঁচ দিন আগে তিনি অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে ব্লু মেরিন রিসোর্টের তিনতলার একটি কক্ষ ভাড়া নিয়েছেন।গত সোমবার দুপুরে হোটেলে ওঠে দেখেন কক্ষটি এক হাজার টাকা দিলেও বেশি হয়। পর্যটকের উপচেপড়া ভিড়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ কয়েক গুণ বেশি ভাড়া আদায় করলেও দেখার যেন কেউ নেই।

বেলা দেড়টার দিকে সেন্ট মার্টিন বাজার ও সৈকতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালায় কউক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেন্ট মার্টিন কোস্টগার্ডের লেফটেন্যান্ট মো. ফয়সাল, সেন্ট মার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ, সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান প্রমুখ।
অভিযান শেষে কউক চেয়ারম্যান দ্বীপের ময়লা-আবর্জনা সংরক্ষণের জন্য ৪০টি ডাস্টবিন ও ময়লা পরিবহনের চারটি ভ্যানগাড়ি হস্তান্তর করেন। ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমেদ এগুলো গ্রহণ করেন।
ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ প্রথম আলোকে বলেন, এখন থেকে ডাস্টবিনগুলো সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে রাখা হবে। ডাস্টবিনের বাইরে কোথাও ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *