fbpx

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের শাহবাগ অবরোধ

দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহবাগ অবরোধ করেছেন। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে তারা দলে দলে শাহবাগে জড়ো হতে শুরু করেন। এর আগে তৃতীয় দিনের মতো রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা।

অবরোধের ফলে শাহবাগ মোড় হয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। এতে করে গোটা রাজধানীর যান চলাচল কার্যত ভেঙে পড়েছে। তবে তারা শাহবাগ হয়ে হজযাত্রী পরিবহন ও অ্যাম্বুলেন্স অবরোধের বাইরে রেখেছে।

শাহবাগে জড়ো হওয়া শিক্ষার্থীরা সহপাঠীদের মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত চালক ও হেলপারের যথোপযুক্ত শাস্তিসহ সরকারি তরফ থেকে সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চেয়েছে। এছাড়া রাজধানীর সব চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও দক্ষতা নিয়ে গুরুত্ব দেওয়ারও দাবি জানাচ্ছেন তারা।

শাহবাগ মোড়ের চারপাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ সময় শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান তারা। তবে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস ছাড়া রাজপথ ছাড়বেন না বলে জানাচ্ছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

সকাল থেকেই স্ব-স্ব স্কুল-কলেজের ইউনিফর্ম গায়ে ক্লাস বর্জন করে তারা রাজধানীর মূল সড়কগুলোতে জড়ো হতে শুরু করে। উত্তরার হাউজ বিল্ডিং, ফার্মগেইট, যাত্রাবাড়ীর চৌরাস্তাসহ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করছে। এ সময় নিরাপদ সড়কের দাবিতে হাতে হাতে ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে আন্দোলন করে তারা।

এদিকে সরকারি বিজ্ঞান কলেজের শিক্ষার্থীরা ফার্মগেট এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়েছে। ফলে ওই রাস্তা দিয়ে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এগারোটার দিকে তেজগাঁও থানা পুলিশ তাদের সরিয়ে দিতে গেলে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বসে পড়ে। শিক্ষার্থীরা অবস্থায় নেওয়ায় ফার্মগেট বাসস্ট্যান্ড ও কারওয়ান বাজার থেকে মহাখালি, কল্যাণপুরগামী সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়া মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডিতেও বিভিন্ন স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা মিছিল বের করেছে।

অন্যদিকে যাত্রাবাড়ী মোড়ে অবস্থান নিয়েছে ড. মাহবুবুর রহমান রহমান কলেজের শিক্ষার্থীরা। এর ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে মঙ্গলবারের মতো সারা ঢাকায় বাস কম দেখা যাচ্ছে। যানবাহন চলাচলে অচলাবস্থার ফলে বিপাকে পড়েছেন রাজধানীর মানুষ।

সরেজমিনে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতারা জানাচ্ছেন, সড়কে তেমন বাস নেই। দু-একটা বাস চললেও তাতে যাত্রীতে ঠাসা। এর ফলে সকাল থেকে অফিসমুখী যাত্রী, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের পায়ে হেটে ও রিকশায় করে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। গুণতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়াও।

রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট

বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনে রাজধানীতে গণপরিবহনের সংকট দেখা দিয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রাজধানীবাসী। জানা গেছে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভাঙচুর ও মোবাইল কোর্টের ভয়ে পরিবহন মালিকরা গাড়ি বন্ধ রেখেছেন।

রাজধানী ঘুরে দেখা যায়, সাভার থেকে ঢাকামুখী বাস একদমই শূণ্য। মিরপুর বা গাবতলী থেকে যে কয়েকটি বাস মতিঝিলের দিকে যাচ্ছে সেগুলোতে রয়েছে উপচে পড়া ভিড়। বিশেষ করে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নারী যাত্রীরা। বাস সংকটের কারণে রাউড শেয়ারিং অ্যাপসগুলোর উপর চাপ বেড়েছে।

উল্লেখ্য, রবিবার রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে জাবালে নূর বাসের চাপায় শহিদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনম্যান্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা এ ঘটনার বিচারের দাবিসহ ৯ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। টানা আন্দোলনের চতুর্থ দিন আজ।

গত তিনদিনই শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এসময় আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষের জেরে বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে আগুন দেয়া হয়। এদিকে বেপরোয়া ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *