fbpx

১০ জন হত্যা!

প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায়, বন্দুক হামলা করে ১০ জন হত্যা!

বন্দুক হামলা করে ১০ জন হত্যা!

দিমিত্রিয়স প্যাগোটিস প্রেমে পড়েছিল। তারই সহপাঠী শানা ফিশারের। কিন্তু শানা ফিশার তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি। প্রত্যাখ্যানের ১০ দিনের মাথায় সান্তা ফে স্কুলে হাজির হয় প্যাগোটিস অন্যরূপে। এখানকারই ছাত্র সে। কিন্তু ওই দিন সে স্কুলটিতে ক্লাস করতে যায়নি। বন্দুক হাতে নিয়ে হামলা চালাতে গিয়েছিল সে। ১৮ মে প্যাগোটিসের করা ওই হামলায় নিহত হয় ১০ জন, যাদের মধ্যে ছিল শানা ফিশার—প্যাগোটিসের ভালোবাসার মানুষ।

স্যাডি বেজ, শানা ফিশারের মা। তাঁর মাথায় এখন শুধু এই প্রেম ও প্রত্যাখ্যানের সমীকরণটিই ঘুরছে। নিজের মেয়ের মৃত্যুর কথা বলতে গিয়ে স্যাডি বেজ সিএনএনকে বলেন, ‘দিমিত্রিয়স প্যাগোটিস আমার মেয়ের প্রতি অনুরক্ত ছিল। কিছুদিন আগে, শানার বয়স মাত্র ১৬ বছর চার মাসে পড়েছে, প্যাগোটিস তাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয়। ঘুরতে যেতে চায় একসঙ্গে। প্যাগোটিসের সঙ্গে এর আগে শানার সবচেয়ে ভালো বন্ধুর প্রেম ছিল। আর তার ওই বান্ধবী শানাকে বলেছিল, তোমার উচিত নয় বন্ধুর সাবেক প্রেমিকের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানো। শানা সে রকম কোনো সম্পর্কে জড়ায়নি। এক সপ্তাহ আগে শানা শ্রেণিকক্ষে দাঁড়িয়ে সরাসরি প্যাগোটিসের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।’

মেয়ের মৃত্যুর বিষয়টি এখনো মেনে নিতে পারছেন না স্যাডি বেজ। তিনি বলেন, ‘আমি এখনো অপেক্ষায় আছি, কখন আমার মেয়ে স্কুলের দরজা দিয়ে বেরিয়ে আসবে। পরক্ষণেই বুঝতে পারি, ওই দরজা দিয়ে শানা আর কখনোই উচ্ছল মুখে বেরিয়ে আসবে না।’

টেক্সাসের সান্তা ফে স্কুলের এই বন্দুক হামলার ঘটনা বিহ্বল করে দিয়েছে প্যাগোটিসের পরিবারকেও। হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্যাগোটিসের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘এ ঘটনা অন্য সবার মতো আমাদেরও ভীষণভাবে আঘাত করেছে। রীতিমতো কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেছি বলা যায়। প্যাগোটিস বেশ শান্ত ও চটপটে ছেলে। ঘটনার বিস্তারিত সম্পর্কে আমরা এখনো কিছু জানি না। এই ভয়াবহ ঘটনা সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমের মারফতে যা কিছু জানতে পারছি, তা আমাদের ভালোবাসার প্যাগোটিসের সঙ্গে একেবারেই বেমানান।’

প্যাগোটিসের পরিবার একটি আইনি সংস্থার মাধ্যমে এই বিবৃতি দিয়েছে। এতে এ সম্পর্কিত তদন্তে সব ধরনের সহযোগিতা করার কথা জানিয়েছে প্যাগোটিসের পরিবার। পাশাপাশি এ তদন্ত শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত জনসম্মুখে এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য না করার অঙ্গীকারও ব্যক্ত করা হয়েছে বিবৃতিতে।

একাধিক মানুষকে হত্যা ও সরকারি কর্মকর্তার ওপর হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে প্যাগোটিসের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে তার আটকাদেশকে জামিন অযোগ্য হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ অভিযোগের বিপরীতে এখনো আত্মপক্ষ সমর্থন করে কোনো বিবৃতি আসেনি প্যাগোটিসের দিক থেকে।

এখন পর্যন্ত হামলার কারণ হিসেবে দিমিত্রিয়স প্যাগোটিস যতটুকু বলেছে, সেখানে আবেগপূর্ণ এক কিশোরকেই খুঁজে পাওয়া যায়। সে বলেছে, ‘পছন্দের মানুষদেরই আমি আঘাত করেছি। কারণ আমার একটি গল্প ছিল বলার।’

প্যাগোটিসের আইনজীবী রবার্ট বারফিল্ড সিএনএনকে বলেন, ‘প্যাগোটিসের অবস্থা ভালো নয়। সে বেশ বিভ্রান্ত।’

প্যাগোটিসের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ অপরাধের অভিযোগ আনা হলেও তার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হবে না এটা নিশ্চিত। এ বিষয়ে ডেথ পেনাল্টি ইনফরমেশন সেন্টারের কর্মকর্তা রবার্ট ডানহাম বলেন, টেক্সাসের আইন অনুযায়ী ১৮ বছরের কম বয়সী কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ অপরাধের অভিযোগ প্রমাণ হলেও তাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কোনো বিধান নেই। এ ক্ষেত্রে প্যাগোটিসের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে, যেখানে ৪০ বছর পর সে প্যারোলে মুক্তি পেতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *