fbpx

সিঙ্গাপুরে বহু কাঙ্ক্ষিত ঐতিহাসিক বৈঠকে ট্রাম্প ও কিম

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন সিঙ্গাপুরের একটি হোটেলে আজ মঙ্গলবার বহু আকাঙ্ক্ষিত বৈঠক করছেন

কোরীয় উপদ্বীপে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সুযোগ তৈরি করছে এই বৈঠক। তবে বৈঠকে দুই নেতার আলোচনার বিষয়গুলোই মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রে রয়েছে। উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক অস্ত্র থেকে শুরু করে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কথা বলবেন তাঁরা।

বৈঠকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ। এ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে এখনো মতভেদ থাকলেও কূটনীতিকেরা তা কাটানোর চেষ্টা করছেন। ওয়াশিংটন পরিপূর্ণ, যাচাইযোগ্য ও অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের (সিভিআইডি) নিশ্চয়তা চায় উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে। ট্রাম্প বলছেন, পিয়ংইয়ংকে পারমাণু কর্মসূচি ত্যাগ করতে হবে।

যদি তারা সেটা না করে, তবে আলোচনা গ্রহণযোগ্য হবে না। উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ বলেছে, পিয়ংইয়ং কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতির কথা প্রায়ই বলে আসছে। বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাবার্তা হলেও কোন শর্তে কিম পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের পথে যাবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

১৯৫০-৫৩ সালে যুদ্ধের পর উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অঘোষিত যুদ্ধবিরতি চলছে। এপ্রিলে কিম ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন একটি শান্তিচুক্তির বিষয়ে একমত হয়েছেন। এ ব্যাপারে চলতি মাসের প্রথম দিকে ট্রাম্প বলেন, ‘কোরীয় যুদ্ধ অবসানের বিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।’ গত সপ্তাহে সিউল জানায়, ‘যুদ্ধ সমাপ্তির আগাম ঘোষণার জন্য পিয়ংইয়ং ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে আমরা তিন স্তরে আলোচনা করেছি।’

তবে দুই কোরিয়ার মধ্যে একটি পূর্ণ চুক্তি এগিয়ে নিতে হলে আরও বিশদ আলোচনা এবং উত্তর কোরিয়ার মিত্র চীনকে যুক্ত করা প্রয়োজন হবে। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা অবশ্যই একটি চুক্তি সই করতে পারব এবং সে জন্য আমরা চেষ্টাও করছি।’

কিমের সঙ্গে আলোচনায় মানবাধিকারের বিষয়টি ট্রাম্প তুলছেন কি না, সেটা আরেকটি প্রশ্ন। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন, অপহরণসহ রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত উত্তর কোরিয়া। দেশটিতে ১ লাখ ২০ হাজার রাজনৈতিক বন্দী রয়েছেন। ১৯৭০ থেকে ৮০ দশকে পিয়ংইয়ংয়ের গুপ্তচরদের মাধ্যমে জাপানি নাগরিকদের অপহরণের বিষয় বৈঠকে তোলার জন্য ট্রাম্পের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র জাপান।

পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির পর নিজের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখা নিয়ে আতঙ্কিত কিম। যুক্তরাষ্ট্র তার শত্রুভাবাপন্ন নীতির রাশ টানবে কি না, তা নিয়ে কিমের উদ্বেগ রয়েছে। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের পর তাঁর সরকার যাতে ক্ষমতায় থেকে যেতে পারে, সেই নিশ্চয়তা চাইছেন কিম। কারণ ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ‘লিবিয়ার মডেলে’ করার কথা বলায় এই বৈঠক বাতিলের দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল।

লিবিয়ার পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের জন্য মুয়াম্মার গাদ্দাফি সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণের পর পশ্চিমা সমর্থিত বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতাচ্যুত ও নিহত হন গাদ্দাফি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *