রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স ২০১৮ সালের মে মাসে
চলতি বছরের মে মাসে প্রবাসীরা রেকর্ড ১৪৮ কোটি ২৮ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়ছেন।
রেমিট্যান্সের এই পরিমাণ আগের ৫ বছরের মধ্যে একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ। এটি গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ কোটি মার্কিন ডলার বেশি। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১২৬ কোটি ৭৬ লাখ মার্কিন ডলার। আর এ বছরের এপ্রিলে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩২ কোটি ৭১ লাখ ডলার।
চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে বিদেশ থেকে রেমিট্যান্স এসেছে এক হাজার ৩৫৭ কোটি ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার। এটি ২০১৬-১৭ পুরো অর্থবছরের চেয়ে ৮১ কোটি ডলার বেশি। রোববার (৩ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
হুন্ডি প্রতিরোধে কড়াকড়ি ও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বাড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যেগ এবং ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অভিমত। এছাড়াও অবৈধ লেনদেনের দায়ে বিকাশের দুই হাজার ৮৮৭টি এজেন্টের নম্বর বন্ধ করায় রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই রেমিট্যান্সের প্রবাহে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছিল। গত অর্থবছরের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমেছিল প্রায় সাড়ে ১৪ শতাংশ। এর মধ্যে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রেমিট্যান্সে ধস নামে। ওই মাসে দেশে রেমিট্যান্স আসে মাত্র ৮৫ কোটি মার্কিন ডলার। এটি আগের ছয় বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে চলতি অর্থবছরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স প্রবাহ ঊর্ধ্বমুখী ধারা শুরু হয় এবং এখন পর্যন্ত তা অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, এপ্রিলে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৫ কোটি ৯৬ লাখ ডলার। এর বাইরে বিশেষায়িত দু’টি ব্যাংকের মাধ্যমে এক কোটি ২২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১০৯ কোটি ৭৫ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এক কোটি ৩৪ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বেসরকারি ব্যাংকের মধ্যে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স— ২৮ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার।
এ ছাড়া, অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ১৪ কোটি ৩২ লাখ ডলার, সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার এবং জনতার মাধ্যমে ৮ কোটি ৬৭ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে দেশে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য বিদায়ী ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীরা এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ ডলার সমপরিমাণ মূল্যের রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন, যা এর আগের ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ছিল এক হাজার ৪৯২ কোটি ৬২ লাখ মার্কিন ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স কমেছে ২১৬ কোটি ১৭ কোটি ডলার বা ১৪ দশমিক ৪৭ শতাংশ।