fbpx

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্টলেডি বারবারা বুশ আর নেই

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ফার্স্টলেডি বারবারা বুশ, ৯২, মারা গেছেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের স্ত্রী ছিলেন তিনি। ১৯৮৯ থেকে ১৯৯৩ পর্যন্ত ফার্স্টলেডি ছিলেন বারবারা বুশ। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় তার মৃত্যু হয়েছে। বারবারা বুশ যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ডাইনাস্টিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ নাম। তার স্বামী জর্জ এইচডব্লিউ বুশ ও ছেলে জর্জ ডব্লিউ বুশ দুজনই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। বারবারার স্বামী জর্জ বুশ বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে দীর্ঘজীবী প্রেসিডেন্ট। তার বয়স হয়েছে ৯৩ বছর। বারবারা বুশের মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গণের সকল পর্যায় থেকে আসছে শোক।

তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন, দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। শোক জানানোদের তালিকায় আরও রয়েছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, বিল ক্লিন্টন এবং সাবেক ফার্স্ট লেডি মিশেল ওবামা ও হিলারি ক্লিন্টন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের জটিলতায় ভোগা বারবারা সম্প্রতি চিকিৎসা নেওয়া বন্ধ করে দেন।

গত ১৫ এপ্রিল কয়েক দফা হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ করে আর চিকিৎসা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান পার্টিতে বারবার খুবই শক্ত অবস্থান ছিল। তিনি নিজেকে দলের মধ্যে মাতৃত্বের আসনে অধিষ্ঠিত করেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এক বিবৃতিতে বলেছেন, একজন স্ত্রী, মা, দাদী, আর সাবেক ফার্স্ট লেডি বারবারা বুশ ছিলেন আমেরিকান পরিবারের একজন উপদেষ্টা। সিএনএন জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বারবারা বুশই দ্বিতীয় নারী যিনি স্বামী আর সন্তানকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট পদে দেখেছেন। এর আগে নারী আবিগেইল অ্যাডামসের স্বমী জন অ্যাডামস ও সন্তান জন কোয়েন্সি অ্যাডামস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।

ছয় সন্তানের জননী বারবারা। তবে মাত্র তিন বছর বয়সে ১৯৫৩ সালে মারা যান মেয়ে রবিন। বাকি পাঁচ সন্তান ও ১৭ নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য গুনগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি। ফার্স্ট লেডি থাকাকালে নিজের প্রতিষ্ঠিত বারবারা বুশ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে শিক্ষা প্রচারে ভূমিকা রেখেছেন তিনি। সাদা চুল এবং মুক্তার মালা ও কানের দুলে এক আইকনে পরিনত হন বারবারা। দেখেই যে কেউ চিনে নিতে পারেন। স্বামী জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেডিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর বারবারা দেশটির রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। স্বামীর প্রেসিডেন্টের মেয়াদ শেষে হলে হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর, বারবারা রাজনীতিতে আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠেন। তার দুই ছেলে ডব্লুই বুশ ও জেব বুশের জন্য কাজ করেন তিনি।

বারবারার ছিল ৩০ বছরের এক বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন। একাধারে তিনি টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের রিপ্রেজেনটেটিভ, জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত, রিপাবলিকান পার্টির চেয়ারম্যান, যুক্তরাষ্ট্রের চীনা রাষ্ট্রদূত এবং সিআইএ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়া তিনি দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগানের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯২৫ সালের ৮ জানুয়ারি নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন বারবারা এবং রায় শহরের বেড়ে উঠতে থাকেন।

এরপর সাউথ ক্যারোলিনার বিখ্যাত একটি বোর্ডিং স্কুলে ভর্তি হন। সেখানে একটি নাচের অনুষ্ঠানে জর্জ এইচ ডব্লুউ বুশের সঙ্গে তার পরিচয় ঘটে। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৬ বছর; এইচ বুশ তার থেকে এক বছরের বড়ো ছিলেন। এরপরপরই তাদের মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে নৌবাহিনীর হয়ে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ যুদ্ধে যোগ দেন। ১৯৪৫ সালে জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশকে বিয়ে করেন বারবারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *