fbpx

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তিটি এখন ভারতে

বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তিটি তৈরি হয়েছে ভারতে, যার উদ্বোধন হবে ৩১শে অক্টোবর। ১৮২ মিটার উচ্চতার এ মূর্তিটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে শত শত মিলিয়ন ডলার। উদ্বোধন করা হবে ৩১শে অক্টোবর। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই মূর্তিটির নাম ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ বা ‘ঐক্যের মূর্তি’।

কিন্তু এ মূর্তি নিয়েই এখন ক্ষোভ বিক্ষোভ চরমে উঠেছে গুজরাতের কৃষকদের মধ্যে। গুজরাতের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি এলাকার কৃষক ভিজেন্দ্র তাদবী অনেক দিন ধরেই তার প্রায় তিন একর জমির সেচের পানির জন্য প্রচণ্ড কষ্ট করছেন। অনেক দিন ধরেই মরিচ, ভুট্রা আর বাদাম উৎপাদন করছেন তিনি।

ভারতের লাখ লাখ কৃষকের মতো তিনিও চাষাবাদের জন্য মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু দীর্ঘ শুষ্ককালের কারণে তার মতো আরও অনেক কৃষকই তাদের আয় রোজগার নিয়ে সংশয়ে পড়েন বারবার। এসব কারনে ২০১৫ সালে একবার মিস্টার তাদভী একটি নির্মাণ প্রকল্পে গাড়ি চালকের কাজও নিয়েছিলেন আয় বাড়ানোর জন্য।

সেটি হলো গুজরাত সরকারের বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি বানানোর প্রকল্প। যাতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় সাড়ে তিনশ মিলিয়ন ডলার যার অর্ধেক দিবে গুজরাত সরকার। এখানেই আপত্তি মিস্টার তাদভীর। তিনি বলছেন, “বড় মূর্তি বানাতে এতো অর্থ ব্যয় না করে সরকাররে উচিঁত এটি কৃষিখাতে ব্যয় করা”। ব্রোঞ্জ নির্মিত মূর্তি বানানোর কাজ শেষ, তবে মিস্টার তাদভী গাড়ী চালক হিসেবেই আরও কাজ পেয়েছেন।

কিন্তু তারপরেও অসংখ্য কৃষকের মতো চরম অসন্তুষ্ট তিনিও। প্যাটেল মেমোরিয়ালের আওতায় মূর্তি ছাড়াও একটি তিন তারকা হোটেল, একটি জাদুঘর ও একটি গবেষণা কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। আর এসবই হয়েছে যেখানে সেখান থেকে মিস্টার তাদভীর গ্রাম দশ কিলোমিটার দূরে। সেখানে বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র ও উপজাতীয়। বহু মানুষ সেখানকার ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। যদিও সরকার বলছে এ উঁচু মূর্তিটিই ওই জেলার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলবে কারণ তাদের আশা বছরে অন্তত পচিশ লাখ মানুষ মূর্তিটি দেখতে সেখানে যাবে।

যদিও তাতেও বেশ সন্দেহ স্থানীয়দের। পানির জন্য বৃষ্টির ওপর নির্ভর করা আরেকজন কৃষক ভোলা তাদভী বলছেন অন্য জায়গায় যেখানে বছরে তিনবার ফসল হয় সেখানে তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয় একটি মাত্র ফসলের ওপর। তবে জেলা কর্মকর্তারা বলছেন সরকার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে অঙ্গীকার করেছে। কিন্তু এসব কথায় মন ভরছেনা কৃষকদের, বরং চোখের সামনে মিলিয়ন ডলার খরচ করে বানানো মূর্তিই তাদের পানি না পাওয়ার অসন্তোষ বাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *