fbpx

বাড়বে অহেতুক মৃত্যু ঝুঁকি তড়িঘড়ি লকডাউন শিথিলে

যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফুচি বলেছেন, তড়িঘড়ি করে লকডাউন তুলে নেওয়া হলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ফের ছড়িয়ে পড়বে। আর লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও যদি ফেডারেল গাইডলাইন মানা না হয়, তাহলে ‘সামান্য সংক্রমণ’ থেকেই বড় ধরনের প্রাদুর্ভাবের সৃষ্টি হবে। আর তখন ‘অহেতুক দুর্ভোগ ও মৃত্যু’র ঝুঁকি বেড়ে যাবে।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের এক শুনানিতে এসব মন্তব্য করেন ডা. ফুচি। স্বেচ্ছা ঘরবন্দি থাকার কারণে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে যোগ দেন তিনি। লকডাউন শিথিল করার বিষয়েই রিপাবলিকান সংখ্যাগরিষ্ঠ সিনেটে ওই শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৮০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যাওয়ার যে পরিসংখ্যান দেওয়া হচ্ছে প্রকৃত সংখ্যা তার চেয়েও অনেক বেশি বলে মনে করেন ডা. ফুচি। তিনি হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্কফোর্সের অন্যতম সদস্য।

ডা. ফুচি শুনানিতে যা বলেছেন তা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। দ্রুত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ সব কিছু খুলে দিয়ে আবার আগের অবস্থায় ফিরতে চান ট্রাম্প।

লকডাউন শিথিলের ব্যাপারে হোয়াইট হাউস থেকে কেন্দ্রীয়ভাবে একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে তিন ধাপে ১৪ দিনের একটি পরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও স্কুল খুলে দেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকারগুলোকে এ ধাপগুলো মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে।

এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রাজ্যে অর্থনৈতিক কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। এতে করে সংক্রমণের মাত্রা তো কমেইনি বরং কিছু ক্ষেত্রে বেড়েছে।

ডা. ফুচি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তা সামাল দেওয়া কর্তৃপক্ষের জন্য কঠিন হয়ে পড়বে। তখন অর্থনীতির চাকা ফের পেছনের দিকে ঘুরে যাবে। অহেতুক দুর্ভোগ ও মৃত্যু ছাড়া কিছুই অর্জন হবে না।

ট্রাম্প প্রশাসন লকডাউন শিথিলের একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে বটে, তবে তা মানা না মানার বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করবে রাজ্য সরকারগুলোর ওপর।

সিনেট শুনানিতে হোয়াইট হাউসের করোনা টাস্কফোর্সের আরও দুই সদস্য অংশ নেন। তারা হলেন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের (সিডিসি) পরিচালক ডা. রবার্ট রেডফিল্ড এবং খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের কমিশনার স্টিফেন হান। স্বেচ্ছা ঘরবন্দি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুনানিতে অংশ নেন তারা।

নিজের বাড়ি থেকে শুনানি পরিচালনা করেন রিপাবলিকান সিনেটর লামার আলেক্সান্ডার। তিনি বলেন, ‘অনির্দিষ্টকাল বাড়িতে বসে থাকা কোনো সমাধান নয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে আর্থিকভাবে সহায়তা করার মতো পর্যাপ্ত অর্থ সরকারের নেই।

ডেমোক্র্যাট সিনেটর প্যাটি মারে বলেন, ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেয়ে সত্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সুরক্ষা সম্পর্কে পর্যাপ্ত দিক নির্দেশনা না দিয়ে মানুষকে কাজে ফিরতে বলতে পারে না সরকার।

যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু রাজ্যে এরই মধ্যে লকডাউন শিথিল করা করেছে। রিপাবলিকান গভর্নর নেতৃত্বাধীন রাজ্যগুলো, যেমন- জর্জিয়া, ওকলাহোমা ও আলাস্কা এদিক দিয়ে এগিয়ে রয়েছে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ১৪ লাখের বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৮৩ হাজারের বেশি মানুষের।  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *