fbpx

ফিলিস্তিনিদের শান্তির কথা বলে ধোকা দিচ্ছে ট্রাম্প

জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের সময় এক রেকর্ড বার্তায় ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই আমাদের সর্বোচ্চ উদ্দেশ্য।’

বৈশ্বিকভাবে ইসরায়েলের অংশ হিসেবে জেরুজালেমের বৈধতা না পাওয়ার পরও সেখানে মার্কিন দূতাবাস খোলা ট্রাম্পের এমন কথা যে মন ভোলানো তা বুঝতে বাকি নেই কারও। একসময় ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণ করতো যে যুক্তরাষ্ট্র, ভাগ্যপরিক্রমায় এখন যুক্তারাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে ইসরায়েল।

আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিশ্রুতির মধ্যেই ছিলো যে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসলে জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপন করা হবে। তবে কি এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েই ক্ষমতার যাওয়ার পথ পাকা করেছিলেন ট্রাম্প। ঘটনা যাই হোক সবাইকে অবাক করে দিয়ে হোয়াইট হাউসের অধিকারী হন ট্রাম্প।

আর ক্ষমতায় আসার কয়েকমাসের মধ্যেই জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস স্থাপনের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলেন তিনি। তেল আবিব থেকে জেরুজালেমে দূতাবাস স্থানান্তরের পেছনে ইহুদি তথা ইসরায়েলের যে বড় লবিং ছিলো তা নি:সন্দেহে বলা যায়।

ট্রম্পের নীতি নির্ধারকদের ওপর ব্যাপক প্রভাব রয়েছে ডানপন্থী আমেরিকান ইহুদিদের। এছাড়া মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স জেরুজালেম নিয়ে এক বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘তিন হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে রাজা ডেভিডের আমলে ঈশ্বরের সিদ্ধান্তে জেরুজালেম ছিল ইসরায়েলের রাজধানী। ডালাসের ধর্ম প্রচারক রবার্ট জেফ্রিজ বাইবেল উদ্ধৃত করে আমাকে বলেছিল।’তার এ কথাতেই জেরুজালেম নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পরিষ্কার হয়ে যায়।

আর শান্তির যে ভ্রান্ত বুলি যুক্তরাষ্ট্র আওড়াচ্ছে তা শুধুমাত্র ইসরায়েলের স্বার্থেই। জেরুজালেমের অনুষ্ঠানে রেকর্ড বার্তায় ট্রাম্প শান্তি চুক্তির ব্যাপারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এছাড়া সব পক্ষের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে এ চুক্তি যে তার নির্বাচনী চুক্তি ও ইহুদীদের লবিংয়ের মত কাজ করবে না তা অনেকটা বলে দেয়া যায়। কারণ মুখে চুক্তির কথা বললেও এখন পর্যন্ত কার্যত কোনও পদক্ষেপ নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র। বরং গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালানো ইসরায়েলকেই সরাসরি সমর্থন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

হোয়াইট হাউজ গাজার হামাস নেতাদের দায়ী করে বলেছে যে, তারা উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‌ইসরায়েলকে উস্কানি দিয়ে এই পরিস্থিতি তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের সাবেক একজন মধ্যস্থতাকারী ডেভিড মিলার বলেছেন, ট্রাম্পের জামাতা জেরার্ড কুশনার এবং তার আইনজীবী মনে করেন, ফিলিস্তিনিদের বাস্তবতা বুঝিয়ে সমাধানের উপায় বের করা যেতে পারে। খবর বিবিসির।

তাদের দূতাবাস স্থানান্তর করার ফলে জেরুজালেম ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এখন জেরুজালেমের সীমানা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণের ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তার অর্থ হলো সম্পূর্ণ জেরুজালেমকেও ইসরায়েলের হাতে তুলে দেয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরই মধ্যে ফিলিস্তিন সরকার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র কখনোও ফিলিস্তিন বিষয়ে মধ্যস্ততা করবে না।

আর এ কাজে তাদেরকে বিশ্বাস করার আর কোনও অবকাশ নেই। সোমবার জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের বিরুদ্ধে গাজা সীমান্তে ব্যাপক বিক্ষোভ করে কয়েক লাখ ফিলিস্তিনি। সেখানে সরাসরি গুলি চালিয়ে প্রায় ৬০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয় প্রায় তিন হাজার ফিলিস্তিনি। বিশ্বের প্রভাবশালী দেশ ও সংগঠন এ ঘটনার জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে দায়ী করে এর তীব্র নিন্দা জানালেও বরাবরের মত ইসরায়েলের পক্ষ নেয় যুক্তরাষ্ট্র।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *